রোববার রাতে ইলিশ শিকারে যাবে চার লাখ জেলে
আপলোড সময় :
০২-১১-২০২৪ ০৯:১৬:২৯ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
০২-১১-২০২৪ ০৯:১৬:২৯ অপরাহ্ন
সংবাদচিত্র : ফোকাস বাংলা নিউজ
ভোলা জেলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে বোরবার থেকে শুরু হবে মাছধরা। রোববার (৩ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে জেলার সাত উপজেলার প্রায় চারলাখ জেলে উৎসবের আমেজে নতুন উদ্যমে নদীতে মাছধরা শুরু করবে। জেলেদের প্রত্যাশা ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ পেলে দীর্ঘ ২২ দিনের ক্ষতি পোষাতে পারবে তারা।
১২ অক্টোবর থেকে মেঘনা ও তেঁতুলিয়ার ১৯০ কিলোমিটার এলাকার অভায়শ্রমে ইলিশসহ সব ধরনের মাছধরা নিষিদ্ধ করে মৎস্য বিভাগ। মূলত এই সময়টা মাছের ডিম দেয়ার মৌসুম। তাই ডিম ছাড়ার প্রক্রিয়া নির্বিঘ্ন করতেই সরকারের এই উদ্যেগ। রোববার মধ্যরাতের পর থেকে এই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে। নতুন উদ্যেমে মৎস্য শিকারের অপেক্ষায় উপকূলের জেলেরা।
অবরোধে অলস সময় কাটিয়ে আগের থেকে মাছশিকারে যাওয়ার জন্য নৌকা ও জাল প্রস্তুত করছেন জেলেরা। কেউ নৌকা মেরামত করছেন, কেউ আবার নতুন করে ইঞ্জিনসহ নৌকা প্রস্তুত করছেন। গত ২২ দিনের সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে এমন প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন জেলেরা। দিন যত ঘনিয়ে আসছে ঠিক ততই যেন কর্মচাঞ্চল্য-ব্যস্ততা বাড়ছে জেলেদের মধ্যে।
হাকিমুদ্দিন ঘাট এলাকায় মেঘনাপাড়ের জেলেদের মধ্যে এমন ব্যস্ততা চোখে পড়ে। নদীর কোল ঘেঁষে বাঁধের উপর রাখা হয়েছে সারিসারি নৌকা ও ইঞ্জিনচালিত ট্রলার। সেখানেই ওই নৌকা বা ট্রলার মেরামতের কাজ করছেন জেলেরা। বেকার জেলেদের সময় কাটছে জালবুনে, নৌকা বা ট্রলার প্রস্তুতি নিয়ে। শুধু এখানেই নয়, নৌকা প্রস্তুতের এমন চিত্র জেলার বিভিন্ন মাছঘাট এবং মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীর পাড়ে দেখা যায়।
জানা গেছে, সরকার ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মা ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশের নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিত করতে গত ১২ অক্টোবর রাত ১২টা থেকে শুরু হয়ে আগামী ৩ নভেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত ইলিশের অভয়াশ্রম হিসেবে ভোলার মেঘনা এবং তেঁতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার এলাকায় সব ধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মৎস্য অধিদপ্তর। মোট ২২ দিন ইলিশ শিকার, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ, পরিবহণ ও বিনিময় নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় । ৩ নভেম্বর রাত ১২ টা থেকে জেলেরা ফের মাছশিকার করবে মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীতে। সেই দিনটিকে সামনে রেখে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন জেলেরা। দিন যতই ঘনিয়ে আসছে মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীরপাড়ে জেলেদের মধ্যে ততই ব্যস্ততা বেড়ে চলেছে।
বাতিরখাল এলাকার হারুন মাঝিজানান, এখন নদীতে নৌকা-ট্রলার নিয়ে ইলিশ শিকারে যাওয়া বন্ধ রয়েছে। এ কয়দিন তারা ধারদেনা করে সংসার ও এনজিও এর কিস্তি পরিশোধ করেছেন। সামনে আসছে মাছ শিকারে যাওয়ার সময়, তাই নৌকা, জালবুনা, ইঞ্জিন মেরামত করছেন তারা। আগে থেকে এসব কাজ শেষ না করলে তখন সময় পাওয়া যাবে না মাছশিকারে যাওয়ার।
বেতুয়াঘাটের আলম মাঝি বলেন, এ বছর ভরা মৌসুমে তেমন মাছ ধরা পড়েনি। আশাকরি ইলিশ নিষেধাজ্ঞার পরে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়বে। তখন মাছশিকার করে আড়তদার, মহাজনদের দাদনের টাকা এবং ব্যাংক-এনজিওর ঋণ পরিশোধ করে কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়াতে পারবে তারা।
জেলা মৎস কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, জাতীয় সম্পদ ইলিশ রক্ষায় সরকার ২২ দিনের যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তা বাস্তবায়নে জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্সের সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত ছিল। জেলাপ্রশাসন, মৎস্য বিভাগ ও নৌ-পুলিশ মিলে অভিযান সফল করেছি। এরপরেও কিছু অসাধু জেলে মাছ আহরণের চেষ্টা করেছে, আমরা তা দমন করার চেষ্টা করেছি। এতে আমাদের ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।
বাংলা স্কুপ/ফরহাদ হোসেন/ভোলা প্রতিনিধি/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স